দুই মামলা-আত্মপক্ষ সমর্থনে আরো সময় পেলেন খালেদা জিয়া

০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ১৪:২৩ | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ১৫:১২

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনে ১২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। একই সঙ্গে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নূর আহমেদকে জেরা করতে খালেদা জিয়ার করা আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
আত্মপক্ষ সমর্থনে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই দিন ধার্য করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুর রেজাক খান, জয়নুল আবদিন, মাহবুবউদ্দিন খোকন ও এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানিতে অংশ নেন। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে মোশারফ হোসেন কাজল শুনানি করেন।
শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে জানান, যেহেতু আত্মপক্ষ সমর্থনের বিষয়ে একটি আবেদন হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে, তাই এ মুহূর্তে এই মামলার শুনানি করা যুক্তিযুক্ত হবে না। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পর খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনের বিষয়ে বক্তব্য দেবেন বলে জানান আইনজীবীরা।
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবীরা বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালত খালেদা জিয়াকে তিনটি প্রশ্ন করেছিলেন। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর তিনি প্রায় দিয়ে দিয়েছেন। শুধু একটি প্রশ্নের আংশিক উত্তর বাকি রয়েছে। এ অবস্থায় মামলা কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে অতিরিক্ত সময় চাওয়া হচ্ছে।
ওই সময় দুই পক্ষের আইনজীবীরা এ বিষয়ে আদালতে বক্তব্য দেন। একপর্যায়ে আদালতে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এই পর্যায়ে এসে আদালত বলেন, ‘আমি কারো দ্বারা প্রভাবিত নই। আমার সামনে আসা সাক্ষ্য প্রমাণ অনুযায়ী আমি বিচারকাজ করব। রায় কী হবে এবং রায়ের পরে কী হবে, সে বিষয়ে আমি ভাবি না। আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা আমার রক্ষা করবেন।’
আদালত এই বক্তব্য দিয়ে এক সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে পৌঁছান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ।
ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন—খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুদক।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

Comments

Popular posts from this blog

Watch Star Wars: Episode VII-The Force Awakens (2015) online now

Watch Extraterrestrial (2014) Online Free

The Hero of Color City (2014): watch animation movie online